দেবী বিদ্যেশ্বরী মন্দির শক্তিপীঠ
প্রতিরাম, দক্ষিণ দিনাজপুর,বালুরঘাট
পুরান মতে দেবীর অঙ্গ ৫১ খন্ডে বিভক্ত হয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে সতী পিঠ ও তীর্থস্থানে গড়ে উঠেছে,
আর ৫১ টা সতী পিঠ অনেক স্থানে ছড়িয়ে আছে। সেগুলো অনেকেরই জানা ও ঘোরা। কিন্তু আমরা জেলাবাসী হয়ে কতটা জানি যে আমাদের জেলাতেও একটা শক্তিপীঠ আছে। যেটি ৫১ তম সতী পিঠ নামে পরিচিত(মতান্তরে)। আমাদের জেলার এই শক্তিপীঠ দেবী বিদ্যেশ্বরী মন্দির নামে পরিচয় লাভ করেছে, যার বর্তমান অবস্থান বালুরঘাট শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে প্রতিরামে।
মা এখানে একটু অন্য ভাবে পূজিত হন।
কোনও মূর্তি বা বিগ্রহ নেই এই সতী পিঠে। একটি বেদী আছে যাকেই পূজো করা হয়। তার ওপর ভক্তেরা শাড়ী চাপিয়ে দেন। আর বেদি কে কেন্দ্র করেই অন্নভোগসহ দেবীর নিত্যপুজো-অর্চনা হয়। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন যে, এই পরিমান শাড়ী চড়ানোর পরেও এই বেদীর উচ্চতা একটুও বাড়ে না। আর একবার চাপানো শাড়ী, আর কোনো-মতেই বের করে আনা সম্ভব না। এই সতী পিঠ বা মন্দিরের সৃষ্টি বা বয়সের সঠিক কোনও ইতিহাস বা তথ্য পাওয়া যায় না,
তবে কয়েকটি স্থানীয় লোককথা প্রচলিত আছে এই মন্দিরের সৃষ্টির ইতিহাস সম্পর্কিত,
জনশ্রুতিতে মনে করা হয়, এখানে সতীর বাম পায়ের বুড়ো আঙুল পড়েছিল। আর তাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে এই সতী পিঠ বা দেবী বিদ্যেশ্বরী মন্দির।
এছাড়াও বিরাট রাজার রাজত্বকালে এই মন্দিরের উল্লেখ আছে বলে মনে করা হয়।
আবার কিছুমতে প্রচলিত আছে ভবানী পাঠক এই মন্দিরে প্রতি বছর ভাদ্র মাসের কুশী অমাবস্যা তিথিতে নদী পথে দেবীকে পূজো দিতে আসতেন। আবার কেউ কেউ বলেন কবি কালীদাস এর সময়কালের।
পুজোর রীতি অনুসারে পৌষ মাসের বকুল অমাবস্যা তিথিতে একান্ন জন লালপেড়ে শাড়ি পরিহিত কুমারী কন্যা একান্নটি শঙ্খ ও একান্নটি ঢাক নিয়ে এক বিরাট শোভাযাত্রা করে আত্রেয়ী থেকে অভিষেকের জল আনে। তিন দিন ব্যাপী, কাপালিক দ্বারা মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। দেবীপীঠে পুজো ও প্রসাদ বিতরণ করে চলেন এলাকার ভক্তগণ।
এই পর্ব উপলক্ষে জেলার ও বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক ভক্তসমাগম হয় বিশাল আকারে মহাসমারোহ ঘটে । মন্দিরের পেছনে দিকে আছে ভৈরবকুন্ড।দেবীর ডান দিকে ভৈরব রূপী শিবের মন্দিরও আছে ।
অবশ্যই, একবার দেখে আসতে পারেন এই প্রাচীন লোকগাথা ও বিশ্বাসের পীঠস্থান । বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর ...
@রিপন
.
No comments:
Post a Comment